চাকরির জন্য সিভি লেখার নিয়ম বাংলায় – CV Format in Bangla 

Rate this post

যেকোন চাকরির জন্য সিভি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সঠিক এবং প্রফেশনাল সিভি না থাকার কারণে বেশিরভাগ মানুষের চাকরি পেতে অনেক বেগ পেতে হয়। তাই চলুন চাকরির জন্য সিভি লেখার নিয়ম বাংলায় জেনে নেই। চাকরিতে ইন্টারভিউ এর জন্য ডাক পাওয়া নির্ভর করে সিভির উপরে। সাধারণত চাকরির জন্য সকল সিভি ইংরেজিতে হলেও বেশ কিছু সরকারি চাকরি এবং তুলনামুলক নিম্ন মানের চাকরিগুলোর ক্ষেত্রে বাংলা সিভিতে আবেদন করতে হয়। তাই চলুন আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে চাকরির জন্য সিভি লেখার নিয়ম বাংলায় – CV Format in Bangla সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেই। 

চাকরির জন্য বাংলা সিভি লেখার নিয়ম

চাকরির জন্য বাংলা সিভি লেখার ক্ষেত্রে অবশ্যই বেশ কিছু নিয়ম ফলো করে লিখতে হবে। চাকরির প্রথমে ইন্টারভিউ-এ টিকার জন্য যেহেতু সিভি-ই প্রথম এবং অন্যতম প্রধান হাতিয়ার তাই সিভি লেখার জন্য অবশ্যই নিয়মগুলো অনুসরণ করতে হবে। আর বর্তমান সময়ে যেহেতু সফটওয়্যারের মাধ্যমে সিভি গুলো জবের সাথে ম্যাচ করিয়ে তারপরে ইন্টারভিউ এর জন্য ডাকা হয় তাই অবশ্যই নিয়মগুলো মানা বাধ্যতামুলক। 

কন্টাক্ট ইনফরেশন 

সিভি রাইটিং এর ক্ষেত্রে একটু গুরুত্বপুর্ণ বিষয় হলো কন্টাক্ট ইনফরমেশন যুক্ত করা। তাই শুরুতে নিজের নাম দেওয়া এবং এর পরের লাইনে ইমেইল, মোবাইল নাম্বার, যদি পোর্টফোলিও থাকে সেটা এবং লিঙ্কডিন অ্যাকাউন্ট যুক্ত করা। ইমেইল, লিংকডিন অ্যাকাউন্টের ইউ-আর-এর যুক্ত করার পূর্বে অবশ্যই মেইল অ্যাড্রেস এবং লিংকডিন আইডির ইউ-আর-এল নিজের নামযুক্ত ব্যবহার করতে হবে। 

স্কিলস

বর্তমান সময়ে যেহেতু সিভিগুলোকে প্রথমে সফটওয়্যারের মাধ্যমে যাচাই করা হয়। তাই ইন্টারভিউ- কল পাওয়ার জন্য অবশ্যই স্কিলগুলো জব সার্কুলার অনুযায়ী যুক্ত করতে হবে। স্কিলস সেকশনে শুধু মাত্র যে স্কিলগুলো আপনার জানা আছে সেগুলোই যুক্ত করতে হবে। অহেতুক স্কিলস, যেমন ( সাতার কাঁটা, গান গাইতে পারা ) ইত্যাদি স্কিলস যুক্ত করা থেকে বিরত থাকা। 

এক্সপেরিয়েন্স 

চাকরির পাওয়ার জন্য একটি সিভির সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো এক্সপেরিয়েন্স সেকশন। তাই এই সেকশনটি সবথেকে ভালো করে সাজিয়ে গুছিয়ে লিখতে হবে। বর্তমানে চলমান জবটিকে প্রথমে রাখতে তারপরে সর্বশেষ করা জবটি রাখতে হবে। আর এক্সপেরিয়েন্স সেকশন লিখার নিয়ম হলো, প্রথমে প্রতিষ্ঠানের নাম তার নীচের সারিতে পদের নাম এবং তার নীচের সারিতে আপনি যেসকল দায়িত্ব পালন করেছেন সেগুলো উল্লেখ করা।

যারা ফ্রেশার আছেন তারা এক্সপেরিয়েন্স সেকশনের পরিবর্তে প্রজেক্ট সেকশন যুক্ত করতে পারেন। যেখানে আপ্নারা আপনার ইউনিভার্সিটিতে জমা দেওয়ার প্রজেক্টগুলোর ইনফরমেশন গুছিয়ে লিখতে পারেন। এমনকি কেউ যদি ইন্টার্নশিপ করে থাকেন সেটিও এক্সপেরিয়েন্স সেকশনে যুক্ত করতে পারেন। 

শিক্ষাগত যোগ্যতা 

বর্তমানে শিক্ষাগত যোগ্যতা তেমন বেশি ম্যান্ডাটরি না। তবে সিভিতে অবশ্যই শিক্ষাগত যোগ্যতা যুক্ত করতে হবে। শিক্ষাগত যোগ্যতা যুক্ত করার পূর্বে প্রথমে সর্বশেষ ডিগ্রি যুক্ত করতে হবে। এর সিভিতে লিখার সময়ে প্রথমে, প্রতিষ্ঠানের নাম, তার নীচের সারিতে ডিগ্রির নাম এবং সাইডে সন , নীচের সারিতে আপনি ঐ ডিগ্রির অধিনে কি কি কোর্স করেছেন সেগুলো যুক্ত করতে পারেন। 

 সার্টিফিকেট

বর্তমান সময়ে অনলাইন সার্টিফিকেট অনেক বেশি গ্রহণযোগ্যতা এবং জনপ্রিয়তা লাভ করা শুরু করেছে। তাই আপনি আপনার স্কিলগুলো শেখার জন্য কোন কোন কোর্স করেছেন সেগুলোর সার্টিফিকেট সার্টিফিকেট সেশকনে যুক্ত করতে হবে। সার্টিফিকেট সেকশন সিভির গুরুত্ব অনেকাংশে বৃদ্ধি করে দেয়। 

CV Format in Bangla

একটা সিভি কতটা প্রফেশনাল সেটা নির্ভর করে সিভির ফরমেটের উপরে। যেহেতু বাংলা সিভিগুলো সাধারণত তুললামূলক নিম্নমানের জবের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। তাই বাংলা সিভির ফরমেট তুলনামুলক অন্যান্য সিভি ফরমেটের থেকে কিছুটা ভিন্ন হয়ে থাকে। চলুন CV Format in Bangla দেখে নেই। 

ব্যক্তিগত তথ্য 

সিভির শুরুতেই ব্যক্তিগত তথ্য এর অধীন নাম, পাসপোর্ট সাইজের ছবি, পিতার নাম, মাতার নাম , স্থায়ী ঠিকানা, বর্তমান ঠিকানা, জন্ম তারিখ, ধর্ম, জাতীয়তা, রক্তের গ্রুপ, উচ্চতা, জাতীয় পরিচয়পত্রের নাম্বার, মোবাইল নাম্বার দিতে হবে। 

শিক্ষাগত যোগ্যতা 

সর্বশেষ ডিগ্রি প্রথমে দিয়ে তারপরে ক্রমানুসারে ডিগ্রিগুলো লিখা। যেমন, যদি আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতা অনার্স / ব্যাচেলর ডিগ্রি হয়। তাহলে, শুরুতে অনার্স/ ব্যাচেলর ডিগ্রি এর তথ্য (ডিগ্রির নাম, প্রতিষ্ঠান, বিভাগ, বোর্ড / বিশ্ববিদ্যালয়, পাসের সন, ফলাফল) যুক্ত করতে হবে। এর পরের সারিতে এইচএসসি ডিগ্রি এবং শেষে এসএসসি ডিগ্রির সকল তথ্যগুলো দিতে হবে। 

চাকরির অভিজ্ঞতা 

সিভির এই সেকশনটা সবথেকে বেশি গুরুত্বপুর্ণ। তাই এখানে অনেক সুন্দর করে অভিজ্ঞতা গুলো ফুটিয়ে তুলতে হবে। প্রথমে, সর্বশেষ করা চাকরির তথ্যগুলো (প্রতিষ্ঠানের নাম, পদের নাম, শুরু তারিখ, শেষের তারিখ) এই তথ্যগুলো যুক্ত করতে হবে। অতঃপর একাধিক চাকরির অভিজ্ঞতা থাকলে সেগুলো পর্যায়ক্রমে যুক্ত করতে হবে।  

দক্ষতা 

কম্পিউটার দক্ষতা কিংবা অন্যান্য প্রসঙ্গিক দক্ষতা গুলো যুক্ত করতে হবে। এছাড়াও এখানে ভাষা দক্ষতাও যুক্ত করতে পারেন। 

স্বীকার উক্তি 

সর্বশেষ সিভির ডিক্লারেশন সেকশনে স্বীকার করতে হবে উপরোক্ত সকল তথ্যগুলো সঠিক এবং সত্য। এবং নীচ সাক্ষর করতে হবে এবং তারিখ দিতে হবে।

উলেক্ষ্য সিভি লেখার সময়ে অবশ্যই চেষ্টা করতে হবে সিভি যেন, এক পৃষ্ঠার মধ্যেই কম্পিলিট হয়ে যায়। তবে যাদের অভিজ্ঞতা ৫ বছরের থেকে বেশি তাদের ২ পেজে হলে সমস্যা নাই। আর সিভিতে, ক্যারিয়ার লক্ষ্য/ উদ্দেশ্য এবং রেফারেন্স এই দুইটা সেকশন প্রয়োজনভেদে যুক্ত করতে পারেন।

বাংলা সিভি ফরমেট ডাউনলোড

আপনি চাইলে খুব সহজেই বাংলা সিভি ফরমেট ডাউনলোড করতে পারবেন। এছাড়াও, ক্যানভা এর মতো প্লাটফর্ম থেকে খুব সহজেই হাজার হাজার ফরমেটের থেকে আপনার পছন্দের ফরমেটে সিভি বানিয়ে সেটা ডাউনলোড করতে পারবেন। নীচে আপনাদের জন্য বাংলা সিভি ফরমেটের পিডিএফ ফাইলটি যুক্ত করে দিলাম। ফাইলটি ডাউনলোড করতে নীচের “বাংলা সিভি ফরমেট” লিংকটিতে ক্লিক করুন। 

বাংলা সিভি ফরমেট 

পরিশিষ্ট

আশা করি, চাকরির জন্য সিভি লেখার নিয়ম বাংলায় – CV Format in Bangla সম্পর্কে বিস্তারিত বুঝতে পেরেছেন। যদি কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারেন।

সিভি যেহেতু আপনার আইডেন্টিটি তাই অবশ্যই সিভিতে সকল তথ্যগুলো সঠিক প্রদান করতে হবে এবং গুছিয়ে লিখতে হবে। সিভিতে অহেতুক কথা লিখা বাদ দিয়ে শুধু প্রয়োজনীয় তথ্যগুলোই যুক্ত করতে হবে। 

Leave a Comment